প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষকে মুসলিম নারীর স্তন্যপান করানোর হাদিস এবং তার কুফল

প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষকে মুসলিম নারীর স্তন্যপান করানোর হাদিস এবং তার কুফল 

পশ্চিমা বিশ্বে বিভিন্ন কর্মক্ষেত্রে বহু মুসলিম নারী পুরুষ সহকর্মীর সাথে এক ঘরে কাজ করেন যা ইসলামের রক্ষণশীল ব্যাখ্যায় একেবারেই অবৈধ। ২০০৭ সালে এই সমস্যার সমাধান দিয়েছিলেন আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ের হাদিস বিভাগের প্রধান ড. ইজ্জত আতিয়া। সমাধানটা হল, মুসলিম নারীরা তাদের পুরুষ সহকর্মীকে ৫ ঢোক স্তন্যপান করাক। তাহলে সেই সহকর্মী সেই নারীর জন্য মাহরাম হয়ে যাবে। যেহেতু মাহরাম নারী-পুরুষদের একসাথে থাকতে বাধা নেই তাই তাদের আর এক ঘরে কাজ করা অবৈধ হবে না। এতে মুসলিম দুনিয়ায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়, তিনি এ সমাধান ফিরিয়ে নেন।  আসলে তিনি এইসব হাদিসের ভিত্তিতে ওই ফতোয়া দিয়েছিলেন :- 

** সুনান ইবনে মাজাহ ৩য় খণ্ড হাদিস ১৯৪৪ - “আয়েশা (রা) বলিয়াছেন, পরকীয়াকারীকে  প্রস্তরাঘাতে মৃত্যুদণ্ডের ও যুবককে দশ ঢোক স্তন্যদানের আয়াত নাযিল হইয়াছিল। অবশ্যই ইহা একটি কাগজের উপরে লিখা হইয়াছিল যাহা আমার কুশনের নিচে ছিল। যখন আল্লাহর রাসূল (স) শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করিলেন, আমরা তাঁহার মৃত্যু লইয়া ব্যস্ত ছিলাম, একটি গৃহপালিত ছাগল ঘরে ঢুকিয়া উহা খাইয়া ফেলে।"

** সহি মুসলিম ৩৪২৫ -  আয়েশা (র) বলিয়াছেন যে, আবু হুদাইফা-র মুক্ত করা ক্রীতদাস সলিম তাহার বাড়িতে তার পরিবারের সহিত থাকিত।  সোহেলের কন্যা  (হুদাইফা-র স্ত্রী - হাসান মাহমুদ) রাসূলের (স) নিকট আসিয়া বলিল (অন্যান্য) পুরুষ মানুষের মতন সলিম বয়ঃপ্রাপ্ত হইয়াছে  এবং অন্যরা যাহা বুঝিতে পারে সেও তাহা বুঝিতে পারে এবং সে মুক্তভাবে আমাদের বাড়িতে প্রবেশ করে। কিন্তু আমি হুদাইফা-র হৃদয়ে কিছু বিরক্তি দেখিতে পাই।  ইহাতে রাসূল (স) তাহাকে বলিলেন "তাহাকে স্তন্যপান করাও, ইহাতে তুমি তাহার সহিত (মাহরাম - হাসান মাহমুদ) বিবাহের অযোগ্য হইবে এবং আবু হুদাইফা যাহা অনুভব করিত তাহা দূরীভূত হইবে। সে ফিরিয়া গেল এবং বলিল "আমি তাহাকে স্তন্যপান করাইলাম এবং আবু হুদাইফা-র হৃদয়ে যাহা ছিল তাহা দূরীভূত হইল"।   

** সহি মুসলিম ৩৪২২ - (সাহাবী) আমরা বলিয়াছেন তিনি আয়েশা (রা)-কে যাহা বিবাহকে অবৈধ করে তাহা লইয়া আলোচনা করিতে শুনিয়াছেন। এবং আয়েশা (র) বলিয়াছেন কোরআনে সুস্পষ্ট ১০ ঢোক স্তন্যপানের এবং পরে ৫ ঢোক স্তন্যপানের আয়াত নাযিল হয়েছিল হইয়াছিল।  (এটাই নারী পুরুষকে পরস্পরের সাথে বিয়েকে অবৈধ করে - তারা পরস্পরের প্রতি মাহরাম হয়ে যায় - হাসান মাহমুদ)। 

** সহি মুসলিম ৩৪২১ - আয়েশা (র) বলিয়াছেন যে, সুস্পষ্ট ১০ ঢোক স্তন্যপান বিবাহকে অবৈধ করে, এই আয়াত নাযিল হইয়াছিল। পরে উহা বাতিল হয় ও ৫ ঢোক দ্বারা প্রতিস্থাপিত হয়। রসূলের (স) মৃত্যুর আগে ইহা কোরানে ছিল ও মুসলিমেরা তাহা পড়িত।  

** অনেক আলেম এ হাদীসগুলোর প্রতিবাদ করেছেন যা প্রশংসার যোগ্য, কিন্তু ওই হাদীসগুলো অনতিবিলম্বে বাতিল ঘোষণা করা উচিত। এটা দুঃখজনক যে বর্ষীয়ান সৌদি আলেম বিখ্যাত ইউটিউবার ইমাম আসিম আল হাকিম বলেন এই হাদিস সহি। তিনি আরো বলেন বিবি আয়েশা (রা) কোন পুরুষের সামনে চেহারা দেখাতে চাইলে তাঁর ভাস্তিভাগ্নিদেরকে বলতেন সেই পুরুষকে স্তন্যপান করাতে যাতে তিনি তার দাদিনানি হন এবং সে তাঁর মাহরাম হয়ে যায়। যদিও অন্যান্য নবী পত্নীগণ এটাকে সম্পূর্ণ বর্জন করেছেন।

তাঁর এই বক্তব্য বিবি আয়েশা'র (রা) জন্য অত্যন্ত অসম্মানজনক, বিশ্ব আলেম সমাজের উচিত  অনতিবিলম্বে এই ধরনের আলেমদের নিবৃত্ত করা। তাঁর ভিডিওর লিংক :- https://www.youtube.com/watch?v=yZeVWVSFnbQ

 

Print