• Home
  • Articles
  • Islamic :: Bangla
  • ইসলামে সঙ্গীত - বিশ্ব-আলেমদের মতে সঙ্গীত ও বাদ্যযন্ত্র বৈধ - অতীত বর্তমানে প্রতিটি মুসলিম দেশে এমন কি খিলাফতেও সঙ্গীত ছিল, আছে এবং থাকবে

ইসলামে সঙ্গীত - বিশ্ব-আলেমদের মতে সঙ্গীত ও বাদ্যযন্ত্র বৈধ - অতীত বর্তমানে প্রতিটি মুসলিম দেশে এমন কি খিলাফতেও সঙ্গীত ছিল, আছে এবং থাকবে

ইসলামে সঙ্গীত - বিশ্ব-আলেমদের মতে সঙ্গীত ও বাদ্যযন্ত্র বৈধ - অতীত বর্তমানে প্রতিটি মুসলিম দেশে এমন কি খিলাফতেও সঙ্গীত ছিল, আছে এবং থাকবে -  হাসান মাহমুদ

****************************************

IN SUPPORTT 1:-     TheSite Logo -  https://bangla.islamonweb.net/Validity-of-Music-in-Islamic-Perspectivehttps://bangla.islamonweb.net/Validity-of-Music-in-Islamic-Perspective

IN SUPPORT 2 - "মস্তিস্কের বয়স বাড়া থামাবেন কীভাবে"? ডক্টর শাহনাজ চৌধুরী (গান শুনুন - ৩ মিনিট ২৫ সেকেন্ডে) - https://www.youtube.com/watch?v=lmMIZgYkgdU 

IN SUPPORT 3 :- "শিল্প-সংস্কৃতি ও ইসলাম" - রিয়াদুল হাসান :-  https://drive.google.com/file/d/1m11bGvEDsI1xKGi1EcB8Q-VPTZm6y_4c/view?fbclid=IwY2xjawLu-wZleHRuA2FlbQIxMABicmlkETFPRXB2WVR3TzlnV0x0Ukw4AR7tRRa6K_Q9jWAGpH60vlgqnZfWlWWBZtSkgI3kFtFmOo8KSwJqTPQm_NeTlQ_aem_4gUaeZrq20Zz7Rpt5qm6Uw

*************************************************************************************

যেকোনো আদেশ-নিষেধের পেছনে প্রজ্ঞা থাকতে হয়। দেখতে হয় সেই আদেশ-নিষেধ সমাজের কি উপকার বা অপকার হলো কিংবা কিছুই হলো না। সঙ্গীত নিষেধের পেছনে কোনই প্রজ্ঞা নেই বরং কোরানের বিকৃত তফসির আছে। ইসলাম ফিতরাতের অর্থাৎ স্বাভাবিক ধর্ম এবং সঙ্গীত মানুষের ফিতরাতের অন্তর্ভুক্ত। সেজন্যই যখন মানুষের ভাষা ছিল না পরিধেয় ছিল না, যখন মানুষ পাহাড়ের গুহায় বাস করত তখনো তারা পশু শিকার করে এনে আনন্দে গান গেয়েছে। গুহাগুলোর দেয়ালে সেসবের ছবি উৎকীর্ণ করা আছে। সঙ্গীত মানুষের ফিতরাতের অন্তর্গত বলেই মুসলিম বিশ্বসহ ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে প্রতিটি মানব সমাজ চিরকাল সঙ্গীতে সয়লাব।

সূত্র:- সঙ্গীত অংশ - সার্চ "উসমানীয় সাম্রাজ্য" – উদ্ধৃতি:-

https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%89%E0%A6%B8%E0%A6%AE%E0%A6%BE%E0%A6%A8%E0%A7%80%E0%A6%AF%E0%A6%BC_%E0%A6%B8%E0%A6%BE%E0%A6%AE%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A6%BE%E0%A6%9C%E0%A7%8D%E0%A6%AF MUSIC_CALIPHS.png

ইন্টারনেটে "তানজীমাত কী? তানজীমাত যুগে অটোমান তুরস্কে গৃহীত সংস্কারাবলি কী ছিল?"  https://www.islamichistoryvirtualacademy.com/2022/07/What%20is%20Tanzimat%20The%20Reforms%20adopted%20in%20Ottoman%20Turkey%20during%20the%20Tanzimat%20movement.%20.html

এর "চ" অংশের সাত নম্বর পয়েন্টে আছে :- "১৮৪৪ সালে প্রথম জাতীয় পরিচয় পত্রের প্রচলন করা হয়। উসমানীয় জাতীয় সংগীত ও উসমানীয় জাতীয় পতাকার প্রচলন করা হয়"। মুসলিম দেশগুলোসহ দুনিয়ায় এমন কোন দেশ আছে যার জাতীয় সংগীত নেই?

গান হারাম হলে কোরাণে সেকথা অবশ্যই থাকত কারণ আল্লাহ কিছুই ভুলে যাননা - সূরা মরিয়ম ৬৪ ও ত্বহা ৫২।  সঙ্গীতের আরবি শব্দ “মুসিকি” সারা কোরানের কোথাও নেই। গানকে করা হয় দু’টো আয়াত দিয়ে (১) সুরা লোকমান ৬ এর :- “অবান্তর কথাবার্তা" ও (২) বনি ইসরাইল আয়াত ৬৪ (আল্লাহ শয়তানকে বলছেন):- “তুই তাদের মধ্য থেকে যাকে পারিস স্বীয় আওয়াজ দ্বারা, অশ্বারোহী ও পদাতিক বাহিনী নিয়ে সত্যচ্যুত করে তাদেরকে আক্রমণ কর”।

 ওই 'অবান্তর কথাবার্তা' ও 'আওয়াজ'-ই নাকি সংগীত। কথাটা উদ্ভট - এজন্যই বিশ্ব-মুসলিম শব্দদুটোর ওই অর্থকে বাতিল করেছে। সংগীতের বিপক্ষে বহু হাদিস আছে কিন্তু অতীত-বর্তমান, মরক্কো থেকে ইন্দোনেশিয়া হয়ে পুরো মুসলিম বিশ্ব সেগুলো বর্জন করেছে - সবগুলো দেশ সংগীতে সয়লাব। বিশ্ব বিখ্যাত আলেমরা বলেছেন সংগীত হারাম নয়।উদাহরণ:-

(১) চেঞ্জ টিভির সাথে জীবনের শেষ সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশের অন্যতম শ্রেষ্ঠ ইসলামী চিন্তাবিদ শাহ আব্দুল হান্নান বলেছেন :- "সঙ্গীত সহ বাঙালি সংস্কৃতির সবকিছুই আমরা নেব শুধু শির্ক ও অশ্লীলতা ছাড়া....গানের সাথে মিউজিকও জায়েজ”। সার্চ :- “শাহ আব্দুল হান্নানের সর্বশেষ সাক্ষাৎকার : এমন কথা কেউ বলবেন না আর ! । Changetv.press”।  লিংক:- https://www.youtube.com/watch?v=Z4S76rjA6X0                 

আরেক বাংলাদেশি আলেম বলেছেন- "কবিতা গানে যদি অশ্লীলও হারাম কোন কিছু না থাকে, তাহলে বাজনা ছাড়া এমন সংগীত, কবিতা গাওয়ার অনুমতি আছে" - https://ahlehaqmedia.com/14519/

(২) শাহ আব্দুল হান্নান যাঁকে বলেছেন বিশ্বের শ্রেষ্ঠ আলেম সেই "গ্লোবাল মুফতি" অর্থাৎ বিশ্ব-মুফতি ডক্টর কারযাভী ছিলেন  “ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন অফ মুসলিম স্কলার্স”-এর চেয়ারম্যান,  ইখওয়ানুল মুসলিমিনের উপদেষ্টা, ইউরোপিয়ান কাউন্সিল ফর ফতোয়া এন্ড রিসার্চ- এর সভাপতি ও আরো অনেক কিছু। তিনি তাঁর "ইসলামে হালাল-হারামের বিধান" বইতে ৪০৬ থেকে ৪১১ পৃষ্ঠা পর্যন্ত বিস্তারিত বর্ননা করেছেন, কিছু উদ্ধৃতি:- QARZAVI_MUSIC.png

হল ? বইটি জামাত-শিবিরের অনলাইন লাইব্রেরীতে পাওয়া যায়:-

(1)  https://jamaat-e-islami.org/publication/file/288_islame_halal_haramer_bidhan.pdf  -  

(2) https://shibircloud.com/pdf/islame_halal_haramer_bidhan.pdf

৩। মুসলিম বিশ্বের সর্বোচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান মিসরের আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ের (প্রয়াত) গ্র্যান্ড মুফতি শেখ জাদ আল হক (সার্চ  "https://islamictext.wordpress.com/music-azhar-fatwa/) এর মতে- "অনৈতিক ও গুনাহ-এর কর্মকাণ্ডের সহিত যুক্ত না হইলে, কিংবা সেই বাহানায় মানুষকে হারামের দিকে না টানিলে, কিংবা মানুষকে ফরজ ইবাদত (আল ওয়াজিবাত) হইতে সরাইয়া (বা ভুলাইয়া) না দিলে সংগীত শোনা, সংগীত অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকা, এবং বাদ্যযন্ত্র বৈধ"। 

AL_AZHAR_MUSIC.png

৪। বিস্তারিত গবেষণা :- “হযরত দাউদ (আঃ)-এর আওয়াজ খুব মিষ্টি ছিল। তিনিই প্রথম হিব্রু সঙ্গীত সংকলন করেন এবং মিশরীয় এবং ব্যাবিলনীয় বীণাকে আরও পরিশীলিত বাদ্যযন্ত্রে বিকশিত করেন” –https://www.shahbazcenter.org/is-music-haram.htm

৫। “হজরত ওমর (রঃ)-এর আবাদকৃত শহরের মধ্যে দ্বিতীয় হইল বসরা। আরবি ব্যাকরণ, আরূয শাস্ত্র এবং সঙ্গীতশাস্ত্র এই শহরেরই অবদান”- বিখ্যাত কেতাব ‘আশারা মোবাশশারা’, মওলানা গরিবুল্লাহ ইসলামাবাদী, ফাজেল-এ দেওবন্দ, পৃষ্ঠা ১০৬।GARIBULLAH.png

৬। ইমাম গাজ্জালী - : ‘নবী করিম (সাঃ) হযরত আবু মুসা আশআরী (রাঃ) সম্পর্কে বলিয়াছেন- তাঁহাকে হযরত দাউদ (আঃ)-এর সংগীতের অংশ প্রদান করা হইয়াছে”- মুরশিদে আমিন, পৃষ্ঠা ১৭০, এমদাদিয়া লাইব্রেরী।

৭। মানুষের ইতিহাসে সর্বোচ্চ জনপ্রিয় গায়কদের মধ্যে ছিলেন মিশরের উম্মে কুলসুম কোরানে হাফেজ ছিলেন, তিনি গিনিস বুকেও ছিলেন। সেখানে আল আজহার ইউনিভার্সিটি আছে, কই কোনদিন কোন প্রতিবাদ হয়েছে বলে তো শুনিনি। মিশরের তিনটে পিরামিড আছে, তাঁকে বলা হত “মিশরের চতুর্থ পিরামিড”।  ভারতের উচ্চাঙ্গ সংগীত ভরপুর হয়ে আছে ওস্তাদ আলাউদ্দীন খান, বিসমিল্লা খান, আলী আকবর খানের মতো বহু মুসলিম ওস্তাদদের অবদানে। কাজেই "সংগীত মানুষকে ইসলাম থেকে সরিয়ে নেয়" ঢালাওভাবে এ দাবি ভিত্তিহীন।

৮।  হার্মোনিয়াম-তবলা-পাখোয়াজের সাথে গান হয় আমাদের ইসলাম প্রচারকদের দরগাতেও, এর নাম ‘সামা’।

৯।  "সমাজ ও সংস্কৃতি অধ্যয়ন কেন্দ্র"-এর ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এই নিবন্ধে ডঃ ইউসুফ কারযাভী  দলিল প্রমাণ দিয়ে অত্যন্ত বিস্তারিতভাবে দেখিয়েছেন কেন ইসলামে সঙ্গীত অবৈধ নয়:- " গান ও বাদ্যযন্ত্র হারাম সাব্যস্ত কারীদের দলিল ও ব্যাখ্যা":- https://cscsbd.com/4771/  

১০।  সঙ্গীত-চিকিৎসা এখন বিশ্বজুড়ে একটা সম্মানিত পেশা যা বিভিন্ন ইউনিভার্সিটিতে পড়ানো হয় এবং যাতে নিয়োজিত আছেন অজস্র সংগীত-চিকিৎসক যাঁদের আয় যথেষ্ট এবং যাঁরা সঙ্গীত দিয়ে শারীরিক, মানসিক এবং কগনিটিভ (ব্রেইন সংক্রান্ত) রোগের চিকিৎসা করেন।

 ১১। সঙ্গীত গাছপালা এমন কি পশুদেরকেও ভালো রাখে, এর যথেষ্ট প্রমাণ রয়েছে:-  

(A) ""Yes, there's evidence suggesting music can positively impact plant health"". Quote-:-  "He exposed balsam plants to classical music and found that their growth rate increased by 20% compared to a control group, along with a 72% increase in biomass" - Search- "Fact or Myth: Does Music Affect Plant Growth?: - https://bloomscape.com/green-living/does-music-affect-plant-growth/#:~:text=He%20exposed%20balsam%20plants%20to,even%20entwined%20themselves%20around%20it. 

(B) আমেরিকার ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ হেলথ- এর গবেষণায় দেখা গেছে -"The use of properly selected music in intensive livestock production improves welfare" - https://pmc.ncbi.nlm.nih.gov/articles/PMC8698046/

পশু-পাখি-মাছেরা পশু-পাখি-মাছ হয়েই জন্মায় কিন্তু মানুষ হয়ে উঠতে মানুষের সুকুমার বৃত্তির দরকার হয়, সঙ্গীতই সেই সুকুমার বৃত্তি। সাহিত্য, কবিতা, চিত্রশিল্প ও ভাস্কর্যের ক্ষেত্রেও তা সত্য। সঙ্গীত আমাদের সসীম জীবনে এক টুকরো অসীমের ছোঁয়া। চারদিকের আকাশ-বাতাস সাগর-পর্বত গ্রহ-নক্ষত্র, এই বিশ্বব্রহ্মাণ্ড এক বিপুল সুরস্রষ্টার মহাসঙ্গীত। তাই, গান শুনুন এবং বাচ্চাদের গান শোনান। গান করুন এবং বাচ্চাদের গান শেখান। গান যে ভালবাসে না সে মানুষ খুন করতে পারে।   

পৃথিবীতে আমরাই একমাত্র জাতি যার গানের উৎসব রক্তাক্ত হয়ে যায় ঘাতকের অস্ত্রে। আমাদের সঙ্গীত কনসার্টে বোমা মেরে নিরীহ নর-নারী শিশু বৃদ্ধ খুন করেছে দেশেরই সন্তান।  বুকের রক্ত ঢেলে নিজেদের সংস্কৃতি-সঙ্গীত রক্ষা করতে হয়, দুনিয়ায় আর কোনো জাতির এই উৎকট ও ভয়ংকর সমস্যাটা নেই।

 

 

 

 

 


Print