• Home
  • Articles
  • Islamic :: Bangla
  • ক্যানাডিয়ান শারিয়া কোর্টের জন্মমৃত্যু, ধাপ্পাবাজী ও ব্ল্যাকমেইলিং

ক্যানাডিয়ান শারিয়া কোর্টের জন্মমৃত্যু, ধাপ্পাবাজী ও ব্ল্যাকমেইলিং

ক্যানাডিয়ান শারিয়া কোর্টের জন্মমৃত্যু, ধাপ্পাবাজী ও ব্ল্যাকমেইলিং

হাসান মাহমুদ

(ক্যানাডার শারিয়া কোর্ট কোন ফকীহ, আলেম, মওলানা বা মসজিদ কমিটি প্রতিষ্ঠা করেনি !!  করেছিল এক ধান্ধাবাজ পাকিস্তানি কেনেডিঅ্যান আইনজীবী এবং এর সমর্থনে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল ধান্ধাবাজ মুসলিম আইনজীবীরা। মতলবটা পরিষ্কার, ইসলামের নামে ডলার কামানোর ধান্ধাবাজি। শারিয়া কোর্টে একমাত্র তাদেরই ধান্ধাবাজি চলবে কারণ অমুসলিম কেনেডিঅ্যান আইনজীবীরা শারিয়া সম্বন্ধে কিছুই জানেনা)

অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি, ১৯৯১ সালে ক্যানাডিয়ান আইনের সমর্থনে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল পুরো পশ্চিমা বিশ্বের প্রথম শারিয়া কোর্ট, ক্যানাডার টরোন্টোতে। মুসলিম ক্যানাডিয়ান কংগ্রেসের তৎকালীন ডিরেক্টর অফ শারিয়া ল' হিসেবে আমার সুযোগ হয়েছিল সেই যুদ্ধে সম্মুখ সমরে থাকার। আমাদের প্রচণ্ড আন্দোলনে সেই শারিয়া কোর্ট ক্যানাডিয়ান আইনেই উচ্ছেদ হয়েছিল ২০০৫ সালের ১১ই সেপ্টেম্বর।

এটুকু শুনেই অনেকে লম্ফ দিয়ে ওঠেন - আমরা কিছু মুষ্ঠিমেয় মুসলিম যারা শারিয়া কোর্টের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছি তারা ইসলামের মহাশত্রু - এবং মুরতাদ। তাঁদেরকে বলি - লম্বা একটা নিশ্বাস নিয়ে সিট্ বেল্টটা বেঁধে নিন।  তারপর দেখে নিন তওবা আয়াত ১০৭- এ  অবৈধ "জারার মসজিদ"।  সেখানে নামাজ পড়া হত কিন্তু নবীজীর (স) হুকুমে সাহাবীরা সেটা শুধু ভেঙে গুঁড়িয়েই নয় পুড়িয়েও দিয়েছিলেন। আপনি যদি জানতেন ওই তথাকথিত শারিয়া কোর্ট আসলে ইসলামের নামে টাকা কামানোর ধান্ধাবাজী, যদি জানতেন ওটা শুধু শারিয়ারই নয় বরং দেড় হাজার বছরের মুসলিম ঐতিহ্যেরও ঘোর বিরোধী এবং মুসলিমদেরকে ব্ল্যাকমেইল করার ষড়যন্ত্র তাহলে এই আপনিই ওটা উচ্ছেদে ঝাঁপিয়ে পড়তেন।  অবৈধ মসজিদ উচ্ছেদ করা যদি রাসূলের (সা) সুন্নত হয়, তবে অবৈধ শারিয়া কোর্ট উচ্ছেদ করাও আবশ্যক হয়ে পড়ে। 

(ক) উনাদের ব্রসিয়রে লেখা আছে শারিয়া কোর্টে পক্ষ-বিপক্ষকে কোর্ট ফি দিতে হত, জানিনা কত হাজার ডলার। ব্রসিয়রের প্রচ্ছদে শারিয়া কোর্টের ইসলামী বৈধতা প্রমাণের জন্য উনারা সুরা নিসা আয়াত ৩৫-এর উদ্ধৃতি দিয়েছেন:- "যদি উভয়ের মধ্যে বিরোধ আশংকা কর, তাহলে তোমরা ওর (স্বামীর) পরিবার হতে একজন এবং এর (স্ত্রীর) পরিবার হতে একজন সালিশ নিযুক্ত কর; যদি তারা উভয়ে নিষ্পত্তির ইচ্ছা রাখে, তাহলে আল্লাহ তাদের মধ্যে মীমাংসার অনুকূল অবস্থা সৃষ্টি করে দেবেন"।

                                                                 CDN_SHARIA_COURT_-_BROCHURE.png

অর্থাৎ মীমাংসার মধ্যস্থতাকারী দুজনকে অবশ্যই হতে হবে স্বামী-স্ত্রীর পরিবার বা আত্মীয় থেকে। টাকা খাওয়া উকিল-মোক্তার কবে থেকে স্বামী-স্ত্রীর পরিবার বা আত্মীয় হল?  আমাদের সমাজে  বিবাদমান স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে যে খালু চাচা মুরুবীরা মধ্যস্থতা করেন তাঁরা কি টাকা নেন? উন্মাদের কথা না এটা?  ইসলামের নামে ধান্ধাবাজীর একটা সীমা থাকা উচিত।      

(খ) ক্যানাডার মুসলিমদের অধিকার ছিল সমস্যা নিয়ে ইচ্ছেমত ক্যানাডার কোর্টে বা শারিয়া কোর্টে যাবার।  কিন্তু তাঁরা ব্রসিয়রের পৃষ্ঠা ৯-তে দাবী করছেন - "আপনি যদি শারিয়া কোর্টে না আসেন তাহা হইলে আপনি দাবী করিতে পারেন না যে আপনি ইসলামকে ধর্ম ও সম্পূর্ণ জীবন-বিধান হিসাবে বিশ্বাস করেন"। 

পরিষ্কার ব্ল্যাকমেইলিং। মুসলিমদের ধর্মবিশ্বাসের সার্টিফিকেট দেবার স্পর্ধা উনাদের কোত্থেকে হল? স্পর্ধার একটা সীমা থাকা উচিত। কোনো মুসলিম তাঁদের কোর্টে না গেলে সে ইসলামে বিশ্বাস করেনা মানে হল সে মুরতাদ। এবং তারপরেই চাপাতি হাতে ছুটে আসবে তাঁদের শারিয়া আইন। মুরতাদকে রাস্তাঘাটে হাটবাজারে যে কোনো জায়গায় খুন করা যাবে এবং সে খুনীর হুদুদ শাস্তি হবে না। 

(গ) পৃষ্ঠা ১৫ - সাক্ষাৎকারে শারিয়া কোর্টের প্রতিষ্ঠাতা ব্যারিস্টার মুমতাজ আলীকে প্রশ্ন করা হয়েছিল - 'ইহার (সালিশ, মধ্যস্থতার) খরচ কে দিবে'? তিনি জবাব দিলেন - 'যে দুই পক্ষের মধ্যে মধ্যস্থতা, খরচ তাহারাই এই ফিস দিবে'।

হোয়াট? শারিয়া কোর্টে ফিস? চোদ্দশ' বছরের মুসলিম ইতিহাসে কবে কোন শারিয়া কোর্টে টাকা-পয়সার ধান্ধাবাজী ছিল? কখনও ছিলনা, শারিয়া কোর্টগুলো ছিল খেলাফত পরিচালিত, ফ্রী। প্রচণ্ড শারিয়া সমর্থক টরোন্টোর নূর মসজিদের মওলানা মুবিন শেখ-ও আমার সাথে টিভি-বিতর্কে বলেছেন সালিশ-মীমাংসায় টাকা নেয়া ইসলামে অবৈধ - তাই নূর মসজিদের সালিশ-মীমাংসা সম্পূর্ণ ফ্রী।

মওলানা মওদুদীও বলেছেন - "দেশের বিচার ব্যবস্থাকে ইসলামের মানদণ্ড মোতাবেক করিতে হইলে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ পুনর্গঠন প্রয়োজন, যাহা হইল আদালতের ফিশ উচ্ছেদ করা। ইহা একটি মারাত্মক উদ্ভাবনা এবং আমাদের উপর পাশ্চাত্যের রাজনৈতিক ধ্যান-ধারণার শাসনের আগে আমরা মুসলিমরা উহা জানিতামই না। ইহা ইসলামের মর্মবাণীর বিপরীত যে, আমাদের আদালতগুলি ন্যায়বিচার প্রদানের বদলে "আইনের দোকান" হইয়া পড়ে যাহার দরজা তাহাদের জন্য বন্ধ যাহারা আদালতে টাকা দিতে পারিবে না............  লিটিগেশন কমাইতে আইনজীবির পেশা উচ্ছেদও ইহার অন্তর্গত" - "ইসলামিক ল' এন্ড ইটস ইন্ট্রোডাকশন ইন পাকিস্তান" -  পৃষ্ঠা ৭৪ ও ৭৫।       

(ঘ) ব্রোশিয়রের পৃষ্ঠা ১৫- - সালিশের শুরুতেই বিবাদমান দু'পক্ষকে এই কনট্র্যাক্ট সাইন করতে হবে- "যখন বিবাদমান পক্ষগুলি শারিয়া কোর্টের আইন দ্বারা পরিচালিত হইতে রাজী হয় তখন তাহারা উহা মানিতে বাধ্য বলিয়া স্বীকৃত হয়। ফলে, পরে যদি কেহ সুবিধা মাফিক উহা পরিত্যাগ করে তবে সে অঙ্গীকারভঙ্গ (ব্রিচ অফ কনট্র্যাক্ট) হইতেও অনেক বড়ো অপরাধ করে যাহা ব্ল্যাসফেমি বা ধর্মত্যাগ"।

আবার ব্ল্যাকমেইলিং, আবার "মুরতাদ হত্যা"র উস্কানী। কোনো প্রতিষ্ঠান বা সংগঠনের সাথে দালিলিক অঙ্গীকারভঙ্গ করলে সেটা আইনের ব্যাপার, সেটা কোর্টে ফয়সালা হবে। এর সাথে ধর্মবিশ্বাস ও "ধর্মত্যাগ"-এর কি সম্পর্ক ? এভাবে মুসলিমকে ব্ল্যাকমেইল করা কেন?   স্পর্ধার একটা সীমা থাকা উচিত।

(ঙ) সুন্নীদের হানাফী-মালিকি-শাফিঈ-হাম্বলী আইন আর শিয়াদের জাফরী আইন আছে। উনারা পৃষ্ঠা ১৫ -তে বলছেন - "সংশ্লিষ্ট পক্ষেরা যে মজহাবের অনুসারী সেই মজহাবের আইন প্রয়োগ করা হইবে"।

এটা প্রমাণ করে উনারা বিভিন্ন মাজহাবের ভিন্নতা ও বৈপরীত্য সম্বন্ধে কিছুই জানেন না।  স্বামী-স্ত্রী শিয়া-সুন্নী হলে তাৎক্ষণিক তিন তালাকের কি হবে? ওটা তো সুন্নী আইনে বৈধ কিন্তু শিয়া আইনে অবৈধ!  মুতা (নির্দিষ্ট সময়ের জন্য) বিয়ে সুন্নী মাজহাবে অবৈধ কিন্তু শিয়া মাজহাবে বৈধ। তাঁদের কোর্টে দুই শিয়া পুরুষ-নারী মুতা বিয়ে করতে চাইলে তাঁরা সে বিয়ে পড়াবেন? স্বামী-স্ত্রী দুইজন দুই মযহাবের (হানাফী-মালিকি-শাফিঈ বা হাম্বলী) হলে কি হবে??  এক ধরণের বিয়ে আছে যা হানাফী আইনে বৈধ কিন্তু শাফি আইনে অবৈধ, তার কি হবে? অনেক বিষয়ে মজহাবগুলোর আইন আলাদা বা পরস্পর বিরোধী, তার কি হবে?  এরকম অনেক উদাহরণ আমি আমার বই "শারিয়া কি বলে, আমরা কি করি"-তে দেখিয়েছি। ইউটিউবে সজল রোশনের সাথে আমার " শারিয়া সিরিজ"- এর " মজহাবের বিরুদ্ধে মজহাব" অনুষ্ঠানে বিভিন্ন শারিয়া কেতাব থেকে এর অজস্র প্রমাণ দিয়েছি:- https://www.youtube.com/watch?v=vuwL8SqWJBM&t=82s

(চ) ৩২ পৃষ্ঠায় উনাদের দাবী, এই শারিয়া কোর্ট - "কোনোভাবেই ক্যানাডার আইন, বিচারব্যবস্থা বা আইনকর্তৃত্বকে লংঘন করিবে না"।

ডাঁহা মিথ্যা। এটা আমাদের দুর্ভাগ্য যে এই মিথ্যাবাদীরা শারিয়া কোর্টের নেতা হয়ে বসেছিল - আমাকে এই মিথ্যাবাদী ভণ্ড নেতাদের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে হয়েছিল। এবারে তাঁর দাবীটার ধাপ্পাবাজী:- 

  • ক্যানাডার আইনে অনাথ বা এতিম বাচ্চাদের দত্তক নেয়া বৈধ। কিন্তু মুমতাজ আলীকে যখন জিজ্ঞাসা করা হয় -"ক্যানাডায় কোনো মুসলিম কি দত্তক নিতে পারবেন?" তিনি জবাব দিলেন - "না"।
  • তিনি বলেন,"কোনো মুসলিম যদি উইল না বানাইয়া মৃত্যুবরণ করে তবে আরবিট্রেশন কাউন্সিল মুসলিম আইন অনুযায়ী পদক্ষেপ নিবে"। অর্থাৎ তাঁরা কন্যাকে পুত্রের অর্ধেক সম্পত্তি দেবেন যা ক্যানাডার আইনের পরিপন্থী।
  • কোনো বিবাহিত পুরুষ ফোনের মাধ্যমে দেশে আরেকটা বা আরো তিনটে বিয়ে করতে চাইলে তাঁরা শারিয়া মোতাবেক সে বিয়ে দিতে বাধ্য থাকবেন যা ক্যানাডার আইনের পরিপন্থী। 
  • তালাকের পর বাচ্চাদের ওপর প্রাক্তন স্বামী-স্ত্রীর অধিকারের ব্যাপারেও ক্যানাডার ও শারিয়ার আইন পরস্পর বিরোধী - সেক্ষেত্রে তাঁরা তো অথই সাগরে পড়ে যাবেন ! আইন ও পুরুষ-নারীর জীবনের সংঘাত কত জটিল হতে পারে সে সম্বন্ধে তাঁদের ধারণা থাকলে এমন উদ্ভট দাবী তাঁরা করতে পারতেন না।
  • এমন অজস্র উদাহরণ দেয়া যেতে পারে। এসব থেকে বোঝাই যায় উনারা শারিয়া আইনগুলো পড়েনই নি কিন্তু শারিয়া প্রতিষ্ঠা করতে এসেছেন!

(ছ)  ব্রোশিয়রের পৃষ্টা ১৬--"ক্যানাডিয়ান মুসলিমদের প্রয়োজন মিটাইবার উদ্দেশ্যে আমরা একটি কম্প্রিহেন্সিভ ক্যাম্পেইন করিয়াছি যাহাতে 'উন্মুক্ত সংলাপ' অন্তর্ভুক্ত।   আমরা মুসলিম ও অমুসলিমদিগকে আমন্ত্রণ জানাইতেছি আমাদের নিকট তাঁহাদের মতামত জানাইতে"।    

চরম মিথ্যা কথা। এবং আমি নিজে ও আমার জানা অনেকে তাঁদেরকে বারবার ইমেইল করেছি আলোচনার জন্য। অন্যেরা কি জবাব পেয়েছেন জানিনা তবে আমি পেয়েছিলাম, তাঁরা "পরে" যোগাযোগ করবেন। বারবার ইমেইল করা সত্বেও সেই "পরে"-টা আর কোনোদিনই আসেনি।  এই মিথ্যাভাষণ ও ধাপ্পাবাজী উনাদের জন্য স্বাভাবিক, কারণ শারিয়া প্রতিষ্ঠা উনাদের জন্য বাধ্যতামূলক এবং "উদ্দেশ্য যদি বাধ্যতামূলক হয় তবে সেই উদ্দেশ্য প্রতিষ্ঠা করার জন্য মিথ্যা বলা বাধ্যতামূলক" - শাফি' আইন r.৮.২। একে বলে "তাকিয়া", ইন্টারনেটে মধ্যপ্রাচ্যের বহু ইমামের ভিডিও দেখলে তার আরো প্রমাণ পাবেন।

শারীয়াপন্থীদের দুর্বলতা আমি জানি, ঠিক সেখানেই আমি চেপে ধরেছিলাম এবং সফলও হয়েছিলাম। টিভি সাক্ষাৎকারে এবং সর্বত্র আমি তিনটে দাবী করে বলছিলাম উনারা এগুলো করলে আমি শারিয়া কোর্টের বিরোধীতা ছেড়ে সমর্থনে যোগ দেব। সেগুলো হল টিভিতে

(১) বিয়ে-তালাক, উত্তরাধিকার ও স্ত্রীর অধিকারের শারীয়া আইন দেখান,

(২) আপনাদের অন্ততঃ দশটা মামলার দলিলপত্র দেখান, এবং

(৩) আপনাদের অন্ততঃ পাঁচটা মামলার বাদী-বিবাদীকে টিভিতে এনে জাতির সামনে আমাদের সাথে কথা বলুন।

বলাই বাহুল্য, উনারা তড়িঘড়ি পিঠটান দিয়েছেন। 

আমি অনেক তৃপ্ত যে ইসলামের নামে ওই ইসলাম-বিরোধী  মিথ্যাবাদী ও ধাপ্পাবাজকে আমরা তীব্র আন্দোলন করে চিরতরে উৎখাত করতে পেরেছি।

 ************************************

ইংরেজীর প্রতিটি শব্দের হুবহু বাংলা অনুবাদ সম্ভব নয় - শারিয়া কোর্টের ব্রোশিয়রের হুবহু উদ্ধৃতি "How Sharia-Ism Hijacked Islam" বইটার- “DECEPTION and Death of the Canadian Sharia Court” অধ্যায়ে আছে।  বইয়ের লিংক (ফ্রী ডাউনলোড):- https://hasanmahmud.com/index.php/books/how-sharia-ism-hijacked-islam 

&&&&&&&&&&&&&&&&&&&

The Toronto Star Sept. 14, 2010 - "Five years ago, Premier Dalton McGuinty announced, “There will be no sharia law in Ontario. There will be no religious arbitration in Ontario. There will be one law for all Ontarians.”  The premier was referring to the fact that since 1991, arbitration decisions made according to religious laws were enforceable in Ontario courts, and he was now going to rescind the law that made this possible" - https://www.thestar.com/opinion/one-law-for-all-ontarians/article_59f5ce4a-c1b8-5ea9-9d4a-3d361d82158c.html 


Print