• Home
  • Articles
  • Islamic :: Bangla
  • সজল রোশনের সাথে "গাজওয়ায়ে হিন্দ - ভারতীয় মুসলিমদের মরণ ফাঁদ" অনুষ্ঠানে ব্যবহৃত লিংকগুলো:-

নবী-রসুলদের সম্পত্তির ওয়ারিশ হয় না?

নবী-রসুলদের সম্পত্তির ওয়ারিশ হয় না?

হাসান মাহমুদ

কথাটা আমরা ওয়াজ মাহফিলে প্রায়ই শুনি। এর পক্ষে-বিপক্ষে আমার ব্যক্তিগত মতামত নেই কিন্তু একাডেমিক পর্যবেক্ষণ আছে। নবীজির (সা) একটা বাগান ছিল, তাঁর মৃত্যুর পর ফাতেমা (রা) খলিফা আবুবকরের (রা) কাছে সেই বাগান ওয়ারিশ হিসাবে চেয়েছিলেন। আবুবকর (রা) সেটা দেননি কিন্তু নবী-পরিবারকে বায়তুলমাল থেকে ভাতার ব্যবস্থা করেছিলেন। সহি বুখারী ৮ম খন্ড হাদিস ৭১৮, মদিনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডঃ মহসিন খানের অনুবাদ - https://sunnah.com/ -এ বইটা আছে, - উদ্ধৃতি:-

"আয়েশা বলিয়াছেন - ফাতিমা এবং আব্বাস আল্লাহর রসূলের সম্পত্তিতে তাঁহাদের অংশ নিবার জন্য আবুবকরের নিকট আসিলেন, তাঁহারা ফদকের জমি এবং খাইবারের অংশ চাহিলেন। আবুবকর তাঁহাদিগকে বলিলেন - "আমি আল্লাহর রসূলকে বলিতে শুনিয়াছি - 'আমাদের সম্পত্তির উত্তরাধিকার হয় না, এবং আমরা যাহা ছাড়িয়া যাই তাহা দান করিতে ব্যয় হইবে'। কিন্তু এই সম্পত্তি হইতে উনার পরিবার প্রয়োজনীয় খরচ লইতে পারে"। আবুবকর আরো বলিলেন - "আল্লাহর কসম, সম্পত্তির ব্যাপারে আমি আল্লাহর রসূলকে জীবিত কালে যাহা করিতে দেখিয়াছি তাহা ত্যাগ করিব না'। সুতরাং ফাতিমা আবুবকরের নিকট হইতে চলিয়া গেলেন এবং মৃত্যুর আগে পর্যন্ত তাঁহার সহিত কথা বলিলেন না"।  

ইসলামী দলিলে বহু বিষয়ের মত এই বিষয়েও আমরা সাংঘর্ষিক দলিল পাই।  

  1. নবীজি (সা) কিন্তু বিবি ফাতেমা (রা) কিংবা পরিবারের কাউকে বলেননি যে তাঁরা তাঁর সম্পত্তির উত্তরাধিকারী হবেন না। বরং ঘটেছে উল্টোটা, নবীজি নিজে (সা) বিবি ফাতেমাকে (রা) বলেছেন- "তুমি আমার ধন-সম্পদের অংশ দাবি করতে পার":-"বাংলায় বোখারী শরীফ হাদীস সমূহ"- মো. আব্দুল করিম খান সংকলিত, সম্পাদক হাফেজ মো. আব্দুল জলিল, প্রকাশক বাংলাদেশ লাইব্রেরী, ১৪৬ ঢাকা নিউ মার্কেট, - হাদিস ১৪৫৫:-

WARIS_-_BANGLA_BUKHARI.png

  1. সাম্রাজ্য হল যেকোনো সম্রাটের দুনিয়াবি পার্থিব সম্পত্তি। হযরত সুলাইমান (আ) উত্তরাধিকার সূত্রে তাঁর পিতা হযরত দাউদ (আ)-এর সাম্রাজ্য পেয়েছিলেন। এটা নবীদের সম্পত্তি-উত্তরাধিকারের সুস্পষ্ট উদাহরণ।
  1. পরবর্তীতে মুসলিমদের সংখ্যা বেড়ে গেলে নবীজির (সা) ঘরগুলো সহ চারপাশের জমি অধিগ্রহণ করে অন্তত: দুইবার মসজিদে নববী সম্প্রসারণ করা হয়।  হযরত ওসমান (রা) – উদ্ধৃতি:-

“হিজরি উনত্রিশ সনে তিনি মসজিদ আরও বিরাটাকারে তৈয়ার করার সংকল্প নেন। কিন্তু পার্শ্ববর্তী জমির মালিকগন জমি দান করিতে অসম্মতি জ্ঞাপন করিল। তাই তিনি একদিন শুক্রবারে জুমুআর খোৎবার সময় এমনই ফলপ্রসু ওয়ায করিলেন যে, মালিকগন অত্যন্ত আনন্দ সহকারে উক্ত জমি তাঁহার খেদমতে পেশ করিয়া দিল। তিনি প্রত্যেককে জমির উপযুক্ত মূল্য আদায় করিয়া অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে মসজিদ পুনঃনির্মাণের কাজ আরম্ভ করিলেন" - পৃষ্ঠা ১৪৩, "আশারা মুবাশশারা", ফাযেলে দেওবন্দ মাওলানা গরিবুল্লাহ ইসলামাবাদী। 

  1. উদ্ধৃতি:- https://www.tawheederdak.com/article_details/680

উমাইয়া শাসক আল ওয়ালিদ বিন আব্দুল মালিক ৮৮ হিজরীতে (৭০৭ খৃঃ) মদীনার তৎকালীন গভর্নর উমর বিন আব্দুল আযীযকে মসজিদে নববী পুননির্মাণ ও সম্প্রসারণের জন্য নির্দেশ দেন। এ সময় মসজিদটির পূর্বদিকে ৩০ হাত এবং পশ্চিম দিকে ২০ হাত সম্প্রসারণ করা হয়। উম্মুল মুমিনীনগণের গৃহসমূহ তথা রাসূল (ছাঃ) ও তাঁর দুই সাহাবী আবু বকর ও উমর (রাঃ)-এর কবরও মসজিদের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করে নেয়া হয়। 

  1.  আরব নিউজের লিংকেও এই ঘটনা আছে:-https://www.arabnews.com/node/1356691/amp

Al-Walid bin Abdul-Malik in 707 AD wrote to the ruler of Madinah, Omar bin Abdul Aziz ordering him to buy the houses around the Prophet’s Mosque in order to expand it. He also directed him to include the rooms of the Prophet’s wives in the expansion.

সরকার কারো জমি জবরদখল করতে পারেনা কিন্তু জনকল্যাণে টাকা দিয়ে কিনে নিতে পারে।  অর্থাৎ মসজিদে নববী সম্প্রসারণের জন্য নবীপত্নীদের বংশধরদের কাছ থেকে ঘরগুলো কিনে নেয়া হয়েছিল। এতে প্রমাণিত হয় যে তাঁরা ওই ঘরগুলোর মালিক ছিলেন, অর্থাৎ নবীপত্নীরা সেগুলো ওয়ারিশ হিসেবেই পেয়েছিলেন। 

Print