রসুলের "কলমার দায়ে"

রসুলের "কলমার দায়" 

কে মুসলমান তা ঠিক করার সম্পুর্ণ অধিকার শুধুমাত্র তার নিজেরই, সে অধিকার অন্য কাউকে দেন নি কোরান-রসুল। বরং অন্যকে অমুসলমান বলার বিরুদ্ধে তর্জনী তুলে নিষেধ করা আছে। রসুলের সময়ে কিছু মুনাফিক ইসলাম গ্রহনের ভান করত, এর ওপরে কোরানে একটা সুরা আছে, মুনাফিকুন। এদিকে আমরা দেখি রসুল নির্দেশ দিলেন -"যাহারা নিজেদের মুসলমান বলিয়া দাবী করে তাহাদের তালিকা বানাও"। সাহাবীরা তালিকা বানালেন, সংখ্যাটা রেওয়ায়েত অনুযায়ী ৫০০ থেকে ১৫০০ (সহি বুখারী ৪র্থ খণ্ড হাদিস ২৯৩, ২৯৪)। এদের মধ্যে নিশ্চয়ই মুনাফেকরাও ছিল "যারা নিজেদের মুসলমান বলিয়া দাবী করে"। রসুল সেটা অবশ্যই জানতেন কিন্তু তিনি কাউকে অমুসলিম ঘোষণা করেন নি। তিনি জানতেন সেটা করলে চিরকাল "যারা নিজেদের মুসলমান বলিয়া দাবী করে" এমন অনেককেই কিছু ভ্রান্ত মুসলিম অমুসলিম বলবে। তিনি মেনে চলেছেন আল কোরান সুরা নিসা আয়াত ৯৪ যার মর্মবাণী ওই একই, কেউ নিজেকে মুসলমান হিসেবে সালাম দিলে "তাহাকে বলিওনা তুমি মুসলমান নও"। 

কলমার দায় কি? উদ্ধৃতি দিচ্ছি রসুল (সাঃ)-এর বিখ্যাত জীবনী ইবনে হিশাম ইবনে ইশাক থেকে, পৃষ্ঠা ৬৬৭। “উসামা বিন জায়েদ বলিয়াছে - ‘যখন আমি ও এক আনসার তাহাকে (মিরদাস বিন নাহিক নামে এক অমুসলিমকে - লেখক) আক্রমণ করিয়া পাকড়াও করিলাম তখন সে কলমা উচ্চারণ করিল। কিন্তু আমরা থামিলাম না এবং তাহাকে হত্যা করিলাম।’ রসুল (সাঃ) এর নিকট এই ঘটনা বর্ণনা করিলে তিনি বলিলেন - ‘কলমার দায় হইতে কে তোমাকে রক্ষা করিবে, উসামা?’ আমি বলিলাম, ‘লোকটি শুধু মৃত্যুর হাত হইতে বাঁচিবার জন্য কলমা উচ্চারণ করিয়াছে।’ কিন্তু তিনি প্রশ্নটি করিতেই থাকিলেন এবং করিতেই থাকিলেন। তখন আমি ক্ষমা চাহিলাম ও বলিলাম আমি আর কখনোই তাহাকে খুন করিব না যে কলমা উচ্চারণ করিয়াছে। তিনি বলিলেন- ‘আমার (মৃত্যুর) পরেও তুমি এইকথা বলিবে তো ?’ আমি বলিলাম, ‘বলিব’।”

বড় বেদনা বড় কষ্টে নবীজী এও বলেছেন - “তুমি কি তাহার বক্ষ চিরিয়া দেখিয়াছ?” - (ডঃ ত্বাহা জাবির আল্ আলওয়ানী - “দি এথিক্স অব্ ডিসএগ্রিমেণ্ট ইন্ ইসলাম” - ইমাম হাম্বলের মসনদ ৬ষ্ঠ খণ্ড ২৬০-র উদ্ধৃতি)


Print