দুনিয়ায় বহু সাইট আছে ইসলামকে ব্যঙ্গ করে, কিন্তু কম লোকই জানে। এ নোংরামী চিরকাল ছিল চিরকাল থাকবে, খুন-খারাপী করে ওগুলো উৎখাৎ করা অসম্ভব। সেগুলো ছড়িয়ে দিলে ওদেরই উদ্দেশ্য সফল হয় যা দেশের পত্রিকা ও কেউ কেউ করেছে। হাদিসে ব্যঙ্গকারীদের ব্যাপারে ক্ষমা ও শাস্তির উদাহরণ আছে নবীজী(দ:)-এর, আমাদের দেখতে হবে কোনটা প্রয়োগ করলে আমরা কাংখিত ফল পাব। এ ব্যাপারে শ্রেষ্ট পথ দিয়েছে কোরান যাতে ওই নোংরামীর স্বাভাবিক মৃত্যু হয় - মায়েদা ৫৭, আনাম ১০, জুমার ৫৬, জাসিয়া ৯, আরাফ ১৯৯, নাহল ১২৫, বিশেষ করে নিসা ১৪০ - কেউ ইসলামের প্রতি ব্যঙ্গ করলে সেখান থেকে সরে যেতে হবে, ও হিজর ৯৫ - "ব্যঙ্গকারীর জন্য আমি আপনার পক্ষ থেকে যথেষ্ট"। আমরা রসুল (দ:)-এর শাস্তি/হত্যার হাদিসগুলো বর্জন করি কেননা ওগুলো কোরানের বিপক্ষে। কিছু লোক ও সংবাদমাধ্যম ওগুলো ছড়িয়ে ব্যঙ্গকারীর উদ্দেশ্যটাই হাজারগুণ সফল করে দিয়েছে, যা প্রায় কেউই জানতনা তা কোটি লোক জেনেছে।
ইহুদী-খ্রীষ্টানেরা কোরান বিশ্বাস করেনা ওই নির্দেশ জানেও না কিন্তু স্বাভাবিক বুদ্ধিতে ওটা মেনে চমৎকার সফল হয়েছে। নিউইয়র্কে এক এক্সিবিশনে যীশু'র ছোট্ট মূর্তি প্রদর্শিত হয়েছিল বোতলে মুত্রের ভেতরে রেখে। ভেবে দেখুন কি ভয়াবহ ব্যাপার ! যারা গিয়েছিল তারা নিশ্চয়ই আমাদের মতই ভয়ানক আহত হয়েছিল। কিন্তু সারা দেশের তুলনায় এক্সিবিশনে কজন মানুষই বা যায়, তারা ও তাদের নেতারা কিচ্ছু বলেনি, কোনরকম হই হই করেনি, লং মার্চও করেনি। ফলে ওটা ওখানেই মরে গেছে, পরে কেউ কখনো ওরকম করেনি।
ইহুদীরাও নাজেনেই সে নির্দেশ মেনেছে। আমার মধ্যপ্রাচ্যের দীর্ঘ জীবনে বহুবার দেখেছি মুসলিম দেশগুলোর খবরের কাগজে ইহুদী ধর্মগ্রন্থ ও ধর্মপ্রতীক নিয়ে অসম্ভব নোংরা ও বিভৎস কার্টুন ও মন্তব্য। কোনো মুসলিম সরকার বা দুনিয়ার কোনো ইমাম-আলেমকে দেখলাম না এর বিরুদ্ধে একটা টু শব্দ করতে। ইসরাইলের সামরিক শক্তি প্রচণ্ড, ওই কারণে ইসরাইল যেকোনো দেশকে আক্রমণ করে ছারখার করে দিতে পারত। আমাদের ওই ইমাম/আলেমদের যে রকম গর্জন ও হুঙ্কার শুনছি ওরকম শক্তি থাকলে তাঁরা ঠিক ওই গণহত্যাই করতেন নি:সন্দেহে। কিন্তু ওদের সংসদ ও রাবাইরা (আমাদের যেমন মওলানা) সেদিক দিয়েই যায়নি, স্রেফ নিশ্চুপ থেকেছে। তাতে কি হয়েছে? তাতে ওই কুরুচীপূর্ণ কার্টুন ও মন্তব্য ওখানেই শেষ হয়ে গেছে, শান্তি বজায় থেকেছে। ফিলিস্তিনের ওপরে ইসরাইলের নির্মম গণহত্যা একান্ত বাস্তব কিন্তু সেটা অন্য সমস্যা - ইসলাম মানে যদি শান্তি হয় তবে অন্তত: এই একটা ক্ষেত্রে শান্তি ওরাই বজায় রেখেছে যা আমরা পারিনি কিছু হুংকারী মওলানার জন্য।
রাজনীতিক ও ধর্মীয় নেতারা জনতাকে নিয়ন্ত্রণ করতে চান এবং সেটা খারাপ কিছু নয়, সমস্যা অন্যখানে। ধর্মের শান্তিবাণী দিয়ে জনতাকে নিয়ন্ত্রণ করার চেয়ে হুঙ্কারে জনতার ধর্মীয় আবেগকে উসকিয়ে সেটা করা অনেক সোজা। এক্ষেত্রে জনতারই উচিত হবে হুংকারী ইমামদের বর্জন করা ও যে কোনো হিংস্রতাকে প্রতিহত করা। কারণ সেটাই ইসলাম। কেউ কেউ এতে ক্ষিপ্ত হতে পারেন কিন্তু আমি শুধু কোরানের কথাই বললাম। প্রতিবাদকারী আলেমদের আবেগ আমি বুঝতে পারি এবং আমিও তাঁদের পক্ষেই কিন্তু কোরান মানতে হবে তো।
ভুললে চলবে না প্রতিবাদের ভাষা প্রতিবাদকারীর চরিত্র প্রমাণ করে।
হাসান মাহমুদ
২৯ মার্চ ৪৩ মুক্তিসন (২০১৩)