• Home
  • Articles
  • Islamic :: Bangla
  • বাংলাদেশ ইসলামী রাষ্ট্র??  জরিপ বনাম বর্ষীয়ান আলেম

"অনার কিলিং"- এর শরিয়া ম্যাথ

Codified Islamic Law is a 3 volume compilation mainly from Hanafi Law done by a team of six Islamic scholars published by Islamic Foundation Bangladesh.

Saudi cleric says chatting is forbidden

[Source: New York Times / Bangla News 24]

 

৩১শে মে , ৪৪ মুক্তিসন (২০১৪)

"অনার কিলিং" হলো কোনো মেয়ে কাউকে ভালোবাসলে, কারো সাথে দৈহিক সম্পর্কের বা ঘনিষ্ঠতার প্রমাণ বা সন্দেহ হলে এমনকি বাবা-ভাইয়ের পছন্দসই ব্যবহার চলন বলন বা পোশাক না পড়লেও তাকে তার বাবা ভাইয়েরা খুন করে| ফেসবুকের চ্যাটিংও নাকি হারাম - ঘোষণা দিয়েছেন সৌদি কমিটির সিনিয়র "আলেম" শেখ আব্দুল্লা মুতলাক| এতে প্রতি বছর কয়েক হাজার মেয়ে খুন হয়| আসলে এ হিংস্রতা দেশে দেশে অতি প্রাচীন, সেটা আমরা পাই হাম্মুরাবি, আসিরিয়ান, রোমান এমনকি নেপোলিয়ানের দলিল থেকেও| এর ওপরে গবেষণা লেখালেখি বক্তৃতার অন্ত নেই কিন্তু শরিয়া আইনের সাথে এর সম্পর্কটা প্রায়ই উপেক্ষিত| এখন যেহেতু এই হিংস্রতা বিভিন্ন মুসলিম দেশে বিশেষ করে পাকিস্তানে ভয়াবহভাবে চলছে তাই বিষয়টা খতিয়ে দেখা দরকার| 

ওভাবে কোনো মেয়ে খুন হলে আমরা শারিয়া আইনের দুটি চিত্র পাই|

আইন-চিত্র এক

  • কিসাস আইন -"কতলে আমদ (ইচ্ছাকৃত খুন) হইলে উহার শাস্তিস্বরূপ হত্যাকারীর মৃত্যুদণ্ড হইবে" - (আমাদের ইসলামী ফাউণ্ডেশনের প্রকাশিত) বিধিবদ্ধ ইসলামী  আইন ১ম খণ্ড ধারা ৪১ ও অন্যান্য শারিয়া কেতাব|  
  • সুন্দর আইন, কাজের আইন. কিন্তু পরের আইনটা হল - "নিহতের ওয়ারিশগন হত্যাকারীকে  ক্ষমা করিলে অথবা অর্থের বিনিময়ে তাহার সহিত সন্ধি করিলে কিসাস রহিত হইয়া যায়" - বিধিবদ্ধ ইসলামী  আইন ১ম খণ্ড ধারা ৪৪, ৪৬ ও অন্যান্য শারিয়া কেতাব|  
  • পরিবার এর মধ্যেই একজনকে হারিয়েছে, তারা কিছুতেই আরেকজনকে হারাতে চায় না. তাই তারা খুনীকে "ক্ষমা" করে রক্তমূল্য চাইবে এটাই স্বাভাবিক. রক্তমূল্য তারা না-ও চাইতে পারে, এমনিই ক্ষমা করে দিতে পারে. অর্থাৎ খুনীর মৃত্যুদণ্ড হবেনা, সে তার নিজেরই পরিবারকে রক্তমুল্যের টাকা দেবে. এক্ষেত্রে রাষ্ট্রের অসহায় দাঁড়িয়ে থাকা ছাড়া আর কোনো পথ নেই| 
  • আরেকটা কথা না বললেই নয়. কোটিপতি খুনীতে দেশ ভরে গেছে. তারা খুন করে নিহতের গরীব অসহায় পরিবারকে টাকা দিয়ে হোক হুমকি দিয়ে হোক অবশ্যই "ক্ষমা" করতে বাধ্য করবে - শারিয়া রাষ্ট্রের এক্ষেত্রে কিছুই করার নেই|  

 

বিধিবদ্ধ ইসলামী আইন ১ম খণ্ড

Codified Islamic Law

 

আইন-চিত্র দুই

শরিয়া আইন:- "পিতা-মাতা, দাদা-দাদী ও নানা-নানী পর্যায়ক্রমে পুত্রকে বা নাতিকে হত্যা করিলে হত্যাকারীর মৃত্যুদণ্ড হইবে না, কিন্তু দিয়াত প্রদান বাধ্যকর হইবে" - বিধিবদ্ধ ইসলামী আইন ১ম খণ্ড ধারা ৬৫খ, শাফি আইন উমদাত আল সালিক ধারা ও.১.২.৪

বিধিবদ্ধ ইসলামী আইন ১ম খণ্ড ধারা ৬৫খ

 

শাফি আইন উমদাত আল সালিক ধারা ও.১.২.৪

 

 

এখানে কন্যা ও নাতনিকে হত্যা করার কথা বলা হয়নি কিন্তু শারিয়ার স্পিরিটে বোঝা-ই যায় এতে কন্যা ও নাতনিও অন্তর্ভুক্ত. অন্যান্য বহু আইনের মত এইসব ভয়ংকর নারী-বিরোধী আইন বানানো হয়েছে হাদিসের ভিত্তিতে যেমন:-

সহি ইবনে মজাহ ৪র্থ খণ্ড হাদিস ২৬৬১ ও ২৬৬২

 

 

সহি তিরমিজি ১৪০৪, ১৪০৫ ও ১৪০৬ 

এইসব হাদিস ও শারিয়া আইন-ই ইসলামের নামে নারী-নির্যাতনের হাতিয়ার ও দুনিয়া জুড়ে অমুসলিমের মধ্যে ইসলাম-ভীতি'র প্রধান কারণ। এগুলো শত শত বছরের রাজনৈতিক ও পুরুষতান্ত্রিক হিংস্রতার মধ্যে বানানো হয়েছে ও গড়ে উঠেছে, এগুলো অরক্ষিত দলিল। আমাদের সম্পূর্ণ অধিকার আছে এগুলোর ভালোগুলো রেখে বাকীগুলো বর্জন করার। দেশে দেশে এসব আইনের প্রয়োগ কিছুটা আলাদা হলেও কোনো দেশেই এসব খুনীর খুব একটা শাস্তি হয় না| দু:খের সাথে বলতে হয়, কিছু স্থানীয় ভোট-ভিক্ষুক সাংসদ ও রাজনীতিকেরা এই বর্বর প্রথা উচ্ছেদ তো দুরের কথা বরং "ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি" রক্ষার নামে সমর্থন করেন| ইসলামের নামে অন্যান্য নারী-নিগ্রহকে আমরা ওই কোরান রসুল থেকেই কার্যকরভাবে উচ্ছেদ করতে পারি যার অজস্র প্রমাণ আছে আমার বই  "শারিয়া কি বলে, আমরা কি করি" - তে| কিন্তু অনার কিলিং ও নারীর মুসলমানী এই দুই দানবের বিরুদ্ধে কোনো সরাসরি প্রমাণ আমি কোরান রসুল থেকে পাইনি|

মুসলিম বিশ্বকে পেছনে রেখে যেমন পশ্চিমা বিশ্ব স্থায়ী শান্তি অর্জন করতে পারবে না, ঠিক তেমনি নিজেদের মা-বোনকে পেছনে রেখে তাদের ওপর অত্যাচার করে মুসলিম-বিশ্ব শান্তি অর্জন করতে পারবে না|

শিক্ষা ও আলোকিত মন - এই হলো সাফল্যের চাবিকাঠি| আমাদের আরো অনেকটা পথ যেতে হবে……কতদূর কে জানে? 

 

The author is member of advisory board of World Muslim Congress, General Secretary of Muslims Facing Tomorrow Canada, Canada-representative of Free Muslim Coalition and Advisor, United Women Power, Bangladesh.

Print